রমজান মাসে রোজা ফরয হওয়ার পূর্বে আশুরা'র '
একটি' রোযা ফরজ ছিল। যখন রমজান মাসের রোজা ফরজ করা হলো তখন এই রোজাটিকে ঐচ্ছিক করে দেয়া হয়। রসুলুল্লাহ (সা:) বলেন আশুরা'র দিন আল্লাহ তায়ালা'র দিনসমূহের '
একটি দিন' সুতরাং যার ইচ্ছা সে এদিন রোজা পালন করবে, আর যার ইচ্ছা সে তা ছেড়ে দিবে
(সুত্র সহিহ মুসলিম ২৫৩২)।
যেভাবে আশুরা'র রোজা রাখা শুরু
মুহাররম আল্লাহ তায়ালা'র মাস। এ মাসে, বিশেষ করে ১০ তারিখে সৃষ্টির অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি আল্লাহ তায়ালা সুসম্পন্ন করেছেন। রসুলুল্লাহ (সা:) যখন শুনলেন জাহিলিয়াতের যুগেও আশুরার রোজা রাখা হতো, তখন তিনি (সা:) এর কারণ জানতে চাইলেন, তাঁকে জানানো হলো 'এই দিন আল্লাহ তায়ালা মূসা (আ:) কে বানী ইসরাইল জাতিসহ ফিরাউনের কবল থেকে মুক্ত করেছিলেন এই জন্যে ইহুদীগণ এই দিনে কৃতজ্ঞতা স্বরুপ রোজা রাখে'। রসুলুল্লাহ (সা:) বললেন তাদের থেকে আমরা মূসা (আ:) এর অধিক নিকটবর্তী ও হকদার। এরপর থেকে তিনি (সা:) এই দিনে রোজা রাখা শুরু করলেন এবং সকলকে রোজা রাখতে নির্দেশ দিলেন (সুত্র সহিহ মুসলিম ২৫৪৮ )।যে কারণে আশুরা'র রোজা দুটি রাখা উত্তম
রসুলুল্লাহ (সা:) যখন আশুরার দিন রোজা পালন করেন তখন তাঁকে জানানো হলো ইহুদী ও নাসারগণও এই দিনকে সম্মান প্রদর্শন করেন, একথা শুনে রসুলুল্লাহ (সা:) বললেন
ইনশা'আল্লাহ আমরা আগামী বছর নবম তারিখেও রোজা রাখবো (অর্থাৎ ৯ ও ১০ দুই দিন)। উল্লেখ্য যে, রসুলুল্লাহ (সা:) এর নিয়ম ছিল, কোনো কিছু ইহুদী ও নাসারা'দের সাথে মিলে গেলে তিনি (সা:) কিছু একটা পরিবর্তন করে তাদের থেকে একটু অমিল করে নিতেন এবং সাহাবীগণকে (রা:) কে অমিল করে নেয়ার নির্দেশ দিতেন। তবে এক্ষেত্রে সেবছরই রসুলুল্লাহ (সা:) এর ইন্তেকাল হয়ে যাওয়ায় তিনি (সা:) আগামী আশুরায় দুটি রোজার নিয়ত পূরণ করার সুযোগ পাননি। যেহেতু তাঁর এই নিয়ত সুদৃঢ় ছিল তাই উম্মতগণের মধ্যে যাদের দুদিন রোজা রাখার সামর্থ্য আছে তাদের জন্যে দুদিন রোজা রাখাই উত্তম হবে
(সুত্র সহিহ মুসলিম ২৫৫৬)।
আশুরার রোজার ফজিলত
রসুলুল্লাহ (সা:) রমজান মাসের পর মুহাররম মাসে রোজা পালন করাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতেন
(সুত্র সহিহ মুসলিম ২৫৫২)। তিনি (সা:) বলেছেন "আশুরার রোজা থেকে আমি আল্লাহ তায়ালার নিকট আশা রাখি এ দ্বারা তিনি আমার
পূর্ববর্তী বছরের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দিবেন"
(সহিহ বূখারী ১১৬২)। আবু হুরাইরা (রা:) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, "রমজান মাসের পর
আল্লাহ তায়ালা'র মাস মুহাররেমর রোজা সর্বোত্তম এবং ফরজ সালাতের পর রাতের সালাতই সর্বোত্তম"
( আবু দাউদ ২৪২৯)।