রেড ক্রস এর প্রতিষ্ঠাতা ও সময়কাল
১৮৫৯ সালের ২৪ শে জুন, ইতালীর এক পল্লী প্রান্তর সলফারিনোতে ফ্রান্স ও অষ্ট্রিয়ার মধ্যে তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়। যুদ্ধে ফরাসী বাহিনী বিজয়ী হয়। ১৫ ঘন্টার যুদ্ধের মোট তিন লক্ষ সৈন্যের মধ্যে আহতদের সংখ্যা হয় ৪২ হাজার। সেই সময়ে ব্যবসা সংক্রান্ত জরুরী প্রয়োজনে সুইস যুবক হেনরী ডুনান্ট তৃতীয় নেপোলিয়ানের সাথে দেখা করার জন্য ইতালীতে আসেন। ঐ সময়ে তিনি কৌতূহলের বশবর্তী হয়ে যুদ্ধ ক্ষেত্রে দেখেন বিজয়ী সৈন্যরা বিজয় উৎসবে মেতে আছে আর অন্যাদিক ৪২ হাজার আহত মানুষের মৃত্যু যন্ত্রণা ভোগ করছে। হেনরী ডুনান্ট ১৮৬২ সালে মর্মান্তিক এই যুদ্ধের অভিজ্ঞতার উপর এ ‘মেমোরি অফ সলফেরিনো’ নামে একটি বই লিখে বিশ্বব্যাপী আর্তের সেবামূলক নিরপেক্ষ একটি স্বেচছাসেবী সংগঠন গড়ে তোলার জন্য বিশ্ববাসীর প্রতি আকুল আবেদন জানান।
রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্টের নীতিমালা
রেডক্রস ও রেড ক্রিসেন্টের ৭টি মূলনীতি রয়েছে। এগুলো হচ্ছে ১) মানবতা ২) নিরপেক্ষতা ৩) পক্ষপাতহীনতা ৪) স্বাধীনতা ৫) স্বেচ্ছামূলক সেবা ৬) একতা এবং ৭) সার্বজনীনতা। রেডক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট আন্দোলনের মৌলিক নীতিমালাসমূহ ১৯৬৫ সালে ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত ২০তম আন্তর্জাতিক রেডক্রস সম্মেলনে গৃহীত হয়রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্টের পার্থক্য
১৮৬৪ সালে জেনেভা কনভেনশনে সর্বসম্মতিক্রমে সুইটজারল্যান্ডের পতাকার অনুরুপ 'রেডক্রস' চিহ্নটিকে এই প্রতিষ্ঠানের প্রতীক হিসাবে স্বীকৃত দেয়া হয়। কিন্তু ১৮৭৬ সালে রাশিয়া ও তুরস্কের যুদ্ধের সময় প্রতীকটি খৃস্টান ধর্মের চিহ্ন হিসাবে এটি ব্যবহারে আপত্তি উত্থাপিত হয়। তাই মুসলিমদের জন্য তুরস্কের পতাকার অনুরুপ "রেড ক্রিসেন্ট" চিহ্নটিকে প্রতীক হিসাবে স্বীকৃত দেয়া হয়। ১৯৪৯ সালের কূটনৈতিক সম্মেলনে প্রতীক দুইটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করে।আন্তর্জাতিক রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট বাংলাদেশে 'বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি' নামে পরিচিত। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৮০৯১ জন সেচ্ছাসেবক ও ৮২৪৭২ জন আজীবন সদস্য রয়েছে। 'বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি'-র বিষয়ে বিস্তারিত জানতে দেখুন bdrcs.org