শজারুর জন্যে পোশাক
A Dress for Porcupine
শজারুর জন্যে পোশাক
একজন নতুন অতিথি
A New Visitor
একজন নতুন অতিথি
খুব ভোরে জগিং করতে বের হলো ফিরোজ।পথি মধ্যে সে সাদা কাপড়
পড়া এক লোককে দেখতে পেলো।লোকটি একেবারে স্থির দাঁড়িয়ে আছে।কোনো নড়াচড়া নেই। ফিরোজ জিজ্ঞেস করলো,আপনি কে?
লোকটি কোনো জবাব দিলো না। ফিরোজ নানা রকম প্রশ্ন করলো।তাও লোকটি কোনো জবাব দিলো না। হঠাৎ করে পিছনে এক শব্দ হওয়াই ফিরোজের মাথা ঘুরে গেলো।পিছনে কিছূ দেখতে না পেয়ে সামনে তাকিয়ে লাফিয়ে উঠলো।কারণ সামনে থাকা লোকটি গায়েব। ফিরোজের রীতিমতো কাঁপতে শুরু করলো।সে যতটা সম্ভব ছুট লাগালো। বাড়িতে গিয়ে সব বললো। কিন্তু তার বড়ো ভাই মাজেদ এ কথা বিশ্বাস করলো না। কিন্তু ফিরোজ বলছে সে দেখেছে।
ঠিক আছে কালকে পুলিশ স্টেশন যাবো,মাজেদ বললো।
পরদিন সকালে,
মাজেদ আর ফিরোজ নাস্তা খেয়ে বেরিয়ে গেলো। পুলিশ স্টেশনে গিয়ে পুলিশকে সব বললো ফিরোজ। পুলিশ তখন এক সাংবাদিক কে ডেকে ঘটনাটা পেপারে ছাপিয়ে দিতে বললো।
তিনদিন পর,
এক মহিলা পুলিশ স্টেশনে এসে বললো,সে তার বাগানে সাদা কাপড় পড়া লোকটাকে দেখেছে।আর সে কিছু বলবার আগেই লোকটা গায়েব হয়ে যায়। পুলিশ এ ঘটনাটাও ছাপিয়ে দেয়।
কিছুদিন পর,
এক চাওয়ালা এসে বলে যে,সে চা বানাচ্ছিল।ওই সময়ই সাদা কাপড় পড়া লোকটা তার সামনে দিয়ে হেটে যায়। পুলিশ এ ঘটনাটাও ছাপিয়ে দেয়।এভাবে এই খবরটা চারিদিকে ছড়াতে থাকে এবং বিভিন্ন লোক বিভিন্নভাবে সাদা কাপড় পড়া লোকটাকে দেখতে পাই।
বেশ কয়েকদিন পর,
আচমকা এক খবর এলো,এক লোক মারা গেছে।একজন ডাক্তার তার বাড়ি ফিরছিলো।হঠাৎ সে এক চিৎকার শুনতে পায়।দৌড়িয়ে গিয়ে দেখে এক লোক মাটিতে পড়ে আছে এবং ছটফট করছে।
ডাক্তার জিঙ্গেস করে,কি হয়েছে?
লোকটি শুধু "সাদা" শব্দটি বলে মারা যায়। এ খবরটা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে এবং মানুষদের মাঝে আতঙ্ক তৈরি হয়।কেউ এখন একা থাকতে সাহস পায় না।ধীরে ধীরে অনেক মানুষ খুন হতে শুরু করে।
হুম,ঘটনাটা ভয়ংকর হয়ে উঠছে, ফিরোজ বললো।
আমিও তাই ভাবছি,মাজেদ বললো। শীতকাল পেরিয়ে গ্রীষ্মকাল এসে গেলো।এই গ্রীষ্মকাল শান্তিতে কাটলো। সাদা কাপড় পড়া লোকটা দেখা দেইনি। গ্রীষ্মকাল পেরিয়ে আবার শীতকাল এলো।আবার দেখা দিতে লাগলো সাদা কাপড় পড়া লোকটা। খুব আতঙ্কের মধ্য দিয়ে কাটলো এ শীতকাল। আবার গ্রীষ্মকাল এলো।শান্তিতে কাটলো। শীতকাল এলো। শুরু হলো আতঙ্ক।
আমার মনে হয় সাদা কাপড় পড়া লোকটা শীতকালের ভূত, ফিরোজ বললো।
মানে?, মাজেদ বললো।
এই যে দেখো দুইবার গ্রীষ্মকাল গেলো, একবারও ভূতটা দেখা দেইনি,যেমনি শীতকাল আসছে তখনি দেখা দিতে শুরু করছে আর মানুষ খুন করা শুরু করছে, ফিরোজ বললো।
হুম, ঠিক বলেছো। তারমানে ভুতটা গরমকে ভয় করে?, মাজেদ বললো।
মনে হয়, ফিরোজ বললো।
আগুন থেকে তো গরম বের হয়,তাহলে সে কি আগুন কেউ ভয় করে?,মাজেদ বললো।
হতে পারে,চলো তাকে আগুনে ফেলার চেষ্টা করি, ফিরোজ বললো।
চলো, মাজেদ বললো।
তারা এক লিটার কেরোসিন নিলো,একটি লাইটার নিলো আর একটি লাঠিতে কিছু কাপড় পেঁচিয়ে নিলো।রওনা দিলো এবার তারা। কিছুক্ষণ হাঁটার পর ভুতটাকে দেখতে পেলো।তাদের কে মারার জন্য ভুতটা তেড়ে আসলো। মাজেদ মশাল জ্বালিয়ে দিলো। ভূতটা থেমে গেলো। ফিরোজ তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে দিলো।মাজেদ তার দিকে মশালটা চালিয়ে দিলো। দাউদাউ করে জ্বলে উঠলো।ভূতটা অদ্ভুদ চিৎকার জুড়ে দিলো। কিছুক্ষণ পর ভুতটা চিরতরে শেষ হয়ে গেলো। আবার আগের মতো ওই এলাকায় শান্তি নেমে আসলো।
শীতকালের ভূত
হাড় কাঁপানো শীতের ঠান্ডা বাতাস বইছে চারিদিকে। এরকম অবস্থায় গভীর জঙ্গলে হারিয়ে গেছে ফিরোজ।
বাড়ি ফেরার পথ খুঁজে পাইনা সে।খুজতে খুজতে রাত নেমে আসলো।আশ্রয় খুজছে এখন। হঠাৎ সামনে সে একটি কুড়েঘর দেখতে পেলো। সেখানে গিয়ে সে দরজায় কড়া নারলো।খ্যানখ্যানে গলায় শোনা গেলো,কে?
সে বললো, আমি ফিরোজ।এই জঙ্গলে আমি হারিয়ে গেছি।আজকের রাতটা কি এখানে কাটাতে পারি?
দরজা খুলে গেলো।দেখা গেলো এক বুড়ি কে। বয়সের ভারে কুঁজো হয়ে গেছে।সে বললো,ভিতরে এসো। ফিরোজ ঢুকলো।ঢুকার পর বললো, আমার খিদে পেয়েছে।বুড়ি ফিরোজ কে বসতে বলে চলে গেলো।বুড়ি আনলো মুখোরোচক খাবার। ফিরোজ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লো। হঠাৎ ফিরোজের ঘুম ভেঙ্গে গেল একটা ক্যাচক্যাচ শব্দে।সে দেখতে গিয়ে শুনতে পেলো যে বুড়ি বলছে,আজকে একটা আস্ত মানুষ পাওয়া গেছে।তাকে রোস্ট বানিয়ে খাবো।একথা শুনে ফিরোজের জান উড়ে গেলো।সে বুঝতে পারলো এখনি তাকে পালাতে হবে নইলে জানে বাঁচবে না। তাড়াহুড়ো করে পালাতে গিয়ে পরে গেলো।আর ঝনঝন আওয়াজ হলো।পেছন থেকে কে যেনো বললো,এই এখানে কি করছো?
ফিরোজ পিছনে তাকিয়ে দেখলো,ডাইনিটা দাড়িয়ে আছে।সে কোনো কথা না বলে বাইরে দৌড় দিলো।ডাইনিও তার পেছন পেছন দৌড় দিলো। ফিরোজ পিছনে তাকিয়ে দেখে ডাইনিটা তার দুই পা ও দুই হাতের ভর করে দৌড়িয়ে আসছে। হঠাৎ ফিরোজ এক গর্তে পড়ে গেলো।ডাইনি তখন এসে বলছে,হি হি হি এবার কোথায় যাবে বাছাধন।ডাইনি ফিরোজ কে তুলে নিলো। ফিরোজ বলতে লাগলো,আমাকে মেরো না।আমি তো কোনো অপরাধ করিনি। তুমি কোনো অপরাধ করোনি কিন্তু মানুষ হচ্ছে আমার খাবার আর তুমি মানুষ,ডাইনিটা বললো।ডাইনি ছুরি বের করে ফিরোজের গলায় ধরলো।আর যেমনি তাকে জবাই করার জন্য এক টান দিয়েছে,তেমনি ফিরোজ লাফিয়ে উঠেছে। ফিরোজ দেখলো বাইরের রোদ জানালা দিয়ে এসে তার মুখে পরছে।অন্যদিক থেকে তার মা বলছে, ফিরোজ এসো নাসতা খেয়ে নাও। ফিরোজ ভাবলো,যাক একটা স্বপ্ন ছিলো।
ডাইনির গল্প
অনেক কাল আগে। একটি শহর ছিল। খুবই শান্তিপূর্ণ। হঠাৎ
একদিন সেখানে চোর-বাটপার বেড়ে গেলো। কিছুতেই কমানো যায় না। শাস্তি দিয়েও কিছু হয় না। একবার ধরা পড়ছে তো, শাস্তি দেয়ার পর আবারও চুরি করছে।একদিন এক চোর ধরা পরলো, আদালতে প্রমাণও হলো।এখন শাস্তির পালা। কিন্ত শাস্তি দিয়ে কি হবে, কিছুই হবে না।তখন এক লোক বলল,চোরটার হাত কেটে নাও।তখন বলা হলো, হাত কেটে তো কিছুই হবে না। লোকটা বলল, একবার হাত কেটে দেখো কিভাবে চোর কমে আর এই খবর সবাই কে জানিয়ে দিতে হবে। তখন তার হাত কাটা হলো এবং সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হলো। কিছুদিন পর এক চোর আরেক চোর কে বলছে,চল, চুরি করে আসি।ওই চোর বলল,না ভাই না,দেখলি না ওই চোরের কিভাবে হাত কাটা হলো। আমার ভয় হচ্ছে।
আরে কিছু হবে না চল তো,বলল প্রথম চোর। অবশেষে গেলো চুরি করতে।আর ধরাও পড়লো এবং হাতও কাটা হলো। এরকমভাবে অনেক চোর ধরা পড়েছে এবং তাদের হাত গেছে।তারপর অনেক চোর চুরি করার সময় দ্বিধা করতে লাগলো। অবশেষে,ওই শহরে চোর বলতে আর কিছুই থাকলো না।